ভূমিকা
পৃথিবী বা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত আছে, কিন্তু এটি
সম্পর্নভাবে ব্যাক্তিগত মন্তব্যের বিষয়। ধর্মের প্রতিটি মনুষের বিশ্বস এবং জীবনের
দিক নির্দেশনা বিভিন্ন হতে পারে। বেশিরভাগ মানুষ ইসলাম ধর্ম কে পৃথিবীর র্শেষ্ঠ
ধর্ম মনে করেন, যেখানে শান্তি, সাম্য, ( মৈত্রী- মানে দানশীলতা,
প্রেমময়-দয়া,বন্ধুত্ব, সৈাহার্দ্য, ভালো ইচ্ছা এবং অন্যদের প্রতি সক্রিয় আগ্রহ। )
এবং মানবতাদের বানী প্রধান অংশ। মুসলিমরা সবাই জানি মানবতার ফেরিওয়ালা
আমাদের প্রিয় নবী হয়রত মুহাম্মাদ সাঃ । আবার অন্যের মতে অন্য ধর্মগুলি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম হতে পারে।
ইসলামই একমাত্র সত্য ও শ্রেষ্ঠ ধর্ম হলে হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদি, খ্রিষ্টান ধর্ম
কি। আসুন এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলাপ আলচনা করি এবং জানি।
সূচিপত্রঃ
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম কোনটি এবং কেন। ০১
হিন্দু ধর্মগ্রন্থ গুলির মধ্যে একটি পবিত্র গ্রন্থ হল উপনিষদ ঈশ্বরের
ধারণা। উপনিষেদে উল্লেখ করা আছে, ৬ নম্বর অধ্যায় দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে
প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে। স্রষ্টা মাত্র একজনই দ্বিতীয় কেউ নেই, এটার
উল্লেখ আছে শ্বেতাশ্বতা উপনিষদে ছয় নম্বর অধ্যায়ের ৯ অনুচ্ছেদে তার
কোন প্রভু নেই, তার কোন মালিক নেই, সর্ব সত্য এবং স্রষ্টার কোন বাবা-মা নেই, তার
চেয়ে বড় কেউ নেই।এটার উল্লেখ আছে শ্বেতাশ্বতা উপনিশেদের চার
নাম্বার অধ্যায় ১৯ অনুচ্ছেদে, স্রষ্টার কোন প্রতিকৃতি নেই, সর্বশক্তিমান
স্রষ্টার কোন প্রতি মূর্তি নেই। এছাড়া বলা হয়েছে স্রষ্টা হলেন নিরাকার কেউ
তাকে চোখ দিয়ে দেখতে পায় না, কেউ চোখ দিয়ে তার আকৃতি দেখতে পায় না।
Dr. Zakir Naik
আর হিন্দু ধর্মগ্রন্থ গুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ভগবদ্গীতায় ঈশ্বরের
ধারণা। এটার উল্লেখ আছেভগবদ্গীতায় সাত নম্বর অধ্যায়ের ২০ নম্বর
অনুচ্ছেদে, সেই সব লোক যাদের বিচার বুদ্ধি কেড়ে নিয়েছে, জাগ্রতিক আকাঙ্ক্ষা
তারা অপদেবতার উপাসনা করে, সব জনবাদী লোকেরা তারা অপদেবতার উপাসনা করে আর
মূর্তি পূজা করে। Dr. Zakir Naik
হিন্দু ধর্মের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র হলো বেদে ঈশ্বরের ধারণা। যজুর্বেদে
উল্লেখ করা আছে, ৩২ নম্বর অধ্যায়ের তিন নম্বর অনুচ্ছেদে, স্রষ্টার কোন
প্রতিমূর্তি নেই, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোন প্রতিমূর্তি নেই, তিনি কখনো জন্মাননি,
তারই উপাসনা করা উচিত। যজুর্বেদে উল্লেখ করা আছে, ৪০ নম্বর অধ্যায়ের ৮ নম্বর
অনুচ্ছেদে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নিরাকার এবং পবিত্র। যজুর্বেদে আরো উল্লেখ
আছে, তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা প্রাকৃতিক বস্তুর পূজা করে যেমন আগুন, পানি,
বাতাস ইত্যাদি। এখানে আরো উল্লেখ আছে, তারা আরো অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা পুজো
করে সম্মতির অর্থাৎ মানুষের তৈরি বস্তুর যেমন টেবিল, চেয়ার, মূর্তি
ইত্যাদি। Dr. Zakir Naik
এছাড়াও উল্লেখ আছে, অথর্বয়েদে ২০ নম্বর গ্রন্থ 18 নম্বর
অনুচ্ছেদের তৃতীয় পরিচ্ছেদে, সৃষ্টিকর্তা হলেন
সুমহান। ঋগ্বেদে এক নম্বর অধ্যায়ের ১৬৪ নম্বর অনুচ্ছেদের ৪৬ নম্বর
পরিচ্ছেদে উল্লেখ আছে, সত্য একটাই স্রষ্টা একজনই, জ্ঞানীরা এক স্রষ্টাকে অনেক
নামে ডেকে থাকেন। আর একই কথা স্রষ্টা একজনই জ্ঞানীরা তাকে অনেক নামে ডেকে থাকেন।
ঋগ্বেদের ১০ নম্বর গ্রন্থে ১১৪ অনুচ্ছেদ এর পঞ্চমপরিচ্ছেদে, আর শুধুমাত্র
ঋগ্বেদেই দুই নম্বর গ্রন্থে এক অনুচ্ছেদে একে একে ৩৩ টি নামে ডাকা হয়েছে
সর্বশক্তিমান স্রষ্টাকে। এগুলোর মধ্যেও একটি উল্লেখ আছে ঋগ্বেদের দুই নম্বর
গ্রন্থ ১ অনুচ্ছেদের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে, সেটা হল ব্রহ্মা, ব্রহ্মা শব্দটির অর্থ
হল সৃষ্টিকর্তা। শব্দটা যদি আরবি করেন অর্থ দাঁড়ায় খালেক। মুসলমানদের কোন
আপত্তি থাকবে না, যদি কেউ বলে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হলেন খালিক বা সৃষ্টিকর্তা।
কিন্তু যদি কেউ বলে সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা তার চারটি মাথা আছে প্রত্যেক মাথায়
একটি করে মুখ আমরা মুসলমানরা প্রবল আপত্তি জানাবো। এছাড়াও আপনি সেতা সূত্র
উপনিশেদের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন। শ্বেতাশ্বতারা উপনিষদে ৪
নাম্বার অধ্যায়ের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, স্রষ্টার কোন প্রতিমূর্তি নেই। অন্য
আরেকটি নামে ডাকা হয়েছে ঋগ্বেদের দ্বিতীয় গ্রন্থ প্রথম অনুচ্ছেদে তৃতীয়
পরিচ্ছেদে, সেটা হল বিষ্ণু, বিষ্ণু অর্থ রক্ষাকারী অর্থাৎ পালনকর্তা। যদি
এটার আরবি করেন তাহলে বিষ্ণুর কাছাকাছি শব্দ হয় রব। মুসলমানদের কোন আপত্তি
নেই, যদি কেউ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে বলেন রব, বিষ্ণু বা পালনকর্তা। কিন্তু যদি কেউ
বলে বিষ্ণু হলো সেই ঈশ্বর যিনি বসে আছেন সাপকে আসন বানিয়ে, সমুদ্রের নিচে ভ্রমণ
করেন, আকাশে উড়ে বেড়ান গুরুর নামে এক পাখির পিঠে চড়ে তার চারটি হাত,ডান হাতে
রয়েছে চক্র বাম হাতে রয়েছে সাপ তাহলে আমরা মুসলমানরা প্রবল আপত্তি জানাবো।
এছাড়াও আপনি যজুর্বেদের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন, ৩২ নম্বর অধ্যায়ের তিন
অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে স্রষ্টার কোন প্রতিমূর্তি নেই সর্বশক্তিমান স্রষ্টার কোন
প্রতিমূর্তি নেই। এছাড়া উল্লেখ আছে ঋগ্বেদের ৮ নম্বর গ্রন্থ প্রথম অনুচ্ছেদের
প্রথম পরিচ্ছেদে, শুধুমাত্র তার বর্ণনা কর শুধুমাত্র তারই উপাসনা করা উচিত।
আর ব্রহ্মসূত্র সেখানে এই কথা বলা হয়েছে, ভগবান একিইহে দুচরা নাহি হে .
নেহিহে.নেহিহে জারাভি নেহিহে ( ঈশ্বর মাত্র একজনি দ্বীতিয় কেউ নেই.. কেউ নেই ..
কখনো কেউ ছিলোও না )। তাহলে আপনারা এই গ্রন্থগুলি পড়লে হিন্দু ধর্মের ঈশ্ব কে
বুঝতে পারবেন। Dr. Zakir Naik
পৃথিবীর শ্রেষ্ট ধর্ম গ্রন্থের নাম কি ০২
ইসলামের অন্যতম পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হলো কুরআন। এটি মহান স্রষ্টা আল্লাহর
পক্ষ থেকে অবতীর্ন হয়েছে ইসলামের সর্ব শেষ নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর,
সমগ্র মানবজাতীর জন্য। এতে ৩০ খন্ড এবং ১১৪ টি অধ্যায় রয়েছে। কুরআন ইসলামের
সবচেয়ে প্রধান ধর্মগ্রন্থ হিসাবে মোহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং
ইসলামি শরীয়তের সবচেয়ে প্রধান এবং প্রাথমিক উৎস।
কোন ধর্ম সত্য ০৩
যদি ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থ পড়ে দেখেন, সেখানেও দেখবেন
শান্তির কথা আছে। আমি এরকম কথা কখনোই বলিনি যে অমুক ধর্মটা শান্তির
বিরুদ্ধে, অমুক ধর্মটা সন্ত্রাসবাজদকে সমর্থন করে, আমি শুধু বলেছি সবগুলো ধর্মই
সন্ত্রাসবাজদের বিরুদ্ধে, আমি আমার লেকচারে আরেকটি কথা বলেছিলাম, কোরআনের
একটি আয়াত Surah Al Ma'idah Ch.5 v.32 এই আয়াতটাতে খুব জোরালোভাবে
বলছে, যদি আপনি একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেন। তাহলে আপনি যেন পুরো
মানবজাতিকে হত্যা করলেন। আর যদি একজন নিরীহ মানুষের জীবন বাঁচান, তাহলে যেন পুরো
মানুষ জাতিকে বাঁচালেন। এটা মাত্র একটা আয়াত, তবে সাধারণভাবে আমি একমত বেশিরভাগ
ধর্ম প্রায় সব ধর্ম গুলোই শান্তির বাণী প্রচার করে। এই কারণে যীশু খ্রীষ্ট
আয়ুব (সাঃ ) বলেছিলেন, Gospel Of Luke Ch.24
v.36 তিনি উপরের ঘরে গিয়ে তার শিষ্যদের উদ্দেশ্যে বলে
উঠলেন সালামালাইকুম, এটার মানেও একই তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক
হিব্রুতে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যীশু খ্রীষ্ট আয়ুব (সাঃ ) ও সম্ভার্ষণ
করতে গিয়ে বললেন সালামালাইকুম, এই কথাটাকে যদি আরবি করেন তাহলে হবে
আস-সালামুয়ালাইকুম, শান্তি বর্ষিত হোক। ডক্টর জাকির নায়েক
আরো একটি প্রশ্ন আপনাদের মনে থাকতেই পারে, আপনি বললেন একই ধর্ম আরেকটি ধর্ম থেকে
উন্নত নয়। আমার মতে আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ মাত্র একটাই ধর্ম পাঠিয়েছেন। তিনি
অনেকগুলো ধর্ম পাঠাননি। পবিত্র কোরআন বলছে, যে আল্লাহ পৃথিবীর সমস্ত মানব
জাতিকে বিভক্ত করেছেন বিভিন্ন গোত্রে, বিভিন্ন বর্ণে, বিভিন্ন ভাষায়। যাতে
একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারে। এজন্য না, যে একে অন্যকে ঘৃণা করবে। আল্লাহ
তায়ালা যে ধর্মটা পাঠিয়েছেন সব নবী রাসূলগণের কাছে, হোক তিনি মূসা অথবা হোক
যীশু আয়ুব (সাঃ ),মূসা (সাঃ), মোহাম্মদ (সাঃ) সেটা হচ্ছে আল্লাহর কাছে নিজের
ইচ্ছাকে সমর্পন করা। আর আমি বিশ্বাস করি যে নবী রাসূলগোন সবাই মেন ধরেন আদম, নূহ,
মূসা, যীশু, মোহাম্মাদ, তরা সবাই শান্তিতে থাকুন, সবাই একটা ধর্মই প্রচার করেছেন।
এক আল্লাহকে বিশ্বাস করা আর তারি ইবাদত করা। আর আল্লহ তয়ালার কাছে নিজের ইচ্ছাকে
সম্পর্ণভাবে সমর্থন করা। আসা করি উত্তরটা পেয়ে গেছেন।
ডক্টর জাকির নায়েক
ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url