অর্কিড ফুল, অর্কিডেসি পরিবারের একটি অত্যন্ত সুন্দর ফুল। এর গন ও প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ৭০০ এবং ২০,০০০ এর ও অধিক, এবং এটি শিতলতম অঞ্চলে প্রধানত পাওয়া যায়। অর্কিড ফুলের আকর্ষনীয় বৈশিষ্ট্য মধ্যে বর্নাঢ পুষ্পপুট, বিভিন্ন ধরনের গরন, সুগন্ধ ঔষধি গুনাগুন এবং দীর্ঘস্থায়িত্বকাল। এই ফুলের বিভিন্ন প্রজাতি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়, যেমন হিমালয়ের পূর্বাংশ, বাংলাদেশের সিলেট জেলার উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চল, থাইল্যান্ড, বার্মা, শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া,ফিলিপিনস, মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার উষ্ণ অঞ্চলে। এই ফুলের চাষ পদ্ধতি উষ্ণ এবং আদ্র আবহাওয়াতে করা যায়, এবং এর জন্য দোআঁশ মাটি ব্যবহার করতে হয়।
 |
|
অর্কিড ফুল গাছের পটিং এবং সম্পর্ন পরিচর্যা পুরো বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। অনেকের ভ্রান্ত ধারণা আছে যে অর্কিড গাছ আমাদের বাড়িতে হবে না বা বাঁচানো সম্ভব হবে না। অর্কিড একদম ইজি প্রসেজে আপনার বাড়িতে খুব সুন্দর ভাবে হবে, খুব সুন্দর ফুল ফুটবে, কিন্তু তার পটিং মিডিয়া টা কেমন হবে? এখানে মাটিটা আমরা কখনোই বলবো না কেননা অর্কিড যেটা হ্যাঙ্গিং অর্কিড এটাতে একদম মাটি ব্যবহার করাই চলে না। তাহলে মাটি ছাড়া আমরা কিভাবে লাগাবো এই ব্যাপারটা নিয়েই আলোচনা হবে। এর পটিং মিডিয়াটা কেমন হবে এবং সেই সঙ্গে যাবতীয় পরিচর্যা অর্কিড লাগানো থেকে ফুল ফোটা অবধি কেমন পরিচর্যা করতে হবে সেটা আপনাদের সম্পূর্ণ জানিয়ে দেব সেজন্য বলছি পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আপনার বাড়িতেও অর্কিড ফুল ফুটবে।
টব নির্বাচন। কেমন টবে অর্কিড লাগাবেন
প্রথমেই বলি যে আপনার চারা গুলো কি ধরনের টবে লাগাবেন। অর্কিড গাছের জন্য টপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য ফুল গাছের চারা যেমন আপনি যে কোন টবে লাগান হয়ে যায়। কিন্তু এই অর্কিড গাছের ক্ষেত্রে আপনাকে এমন টব নির্বাচন করতে হবে যে টবে চারিদিকে বায়ু বাতাস প্রবেশ করার মতো ফাঁক থাকতে হবে। যেমন তেমন ছিদ্র হলে কিন্তু হবে না, যাতে ভালোভাবে বায়ু প্রবেশ করতে পারে এমন টব নিবেন। অর্ডিক গাছ টাইট মাটিতে বা গার্ডেন যদি পুতে দেন তাহলে কিন্ত হবে না। কারন এর শিকরে প্রচুর পরিমানে হাওয়া বাতাস দরকার হয়।
পটিং মিডিয়া
প্রথমেই সতর্ক করে দি যে আপনারা কোন রকমের গার্ডেন সয়েল বা কোন কম্পোজ বালি, কোকোপিট, এগুলো কিচ্ছু ব্যবহার করবেন না একদমই ব্যবহার করবেন না। এর পটিং মিডিয়াটা এমন হবে কিছুটা পানি ধরে রাখবে আবার সেই পানিটা প্যাচপ্যাচে হয়ে থাকবে না। আর গাছের শিকড় যেন টবের ফাঁকা অংশ দিয়ে আলো, বাতাস, অক্সিজেন ভালোভাবে পাই। ত সেরকম ভাবে আমরা যে উপকরন গুলো নিবো যেগুলো সব সময় কিছুটা পানি ধরে রাখবে কিন্তু কাদার মত হয়ে থাকবে না। সেজন্য প্রয়োজন হবে ইটের টুকরো যাকে কংকর বা খোয়া বলা হয় । নারকেলের খোসা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিবেন। এরপরে নিবেন কাঠ কয়লা, যেকোনো কয়লা দিবেন না বাড়িতে কাঠ পুরিয়ে কয়লা তৈরি করে নিবেন এবং আপনার প্রয়োজন হবে গাছের ছাল। এই ছালগুলো আপনারা কেনো নিবেন? কেননা অর্কিড টা গাছেই হয়, সে জন্য আমরা এই গাছের ছালগুলো নিবো এর থেকে আপনার লাগানো অর্কিড গাছ খাবার সংগ্রহ করতে পারবে।
এখন এই চারটে মিডিয়া আমরা খুব সুন্দর করে একসঙ্গে মিশিয়ে দিবো। এই প্রশংগে একটা কথা বলি যে এই মিডিয়ার উপকরন গুলোর টুকরো গুলো যাতে সমান সাইজের থাকে তাহলে আমাদের মিডিয়া টা মিশবে খুব সুন্দর। আর আপনারা এই চারটা মিডিয়ার মধ্য যেকোনো একটা অফ করে দিতে পারেন, কিন্তু অবশ্যই তিনটা রাখতে হবে তবে চেষ্টা করবেন এই চারটে উপকরন রাখার। চারটি মিডিয়া সমপরিমান নিবেন যতখানি গাছের ছাল নিবেন ততখানি কাঠ কয়লা নিবেন আর হ্যা কাঠ কয়লা বাদ দিবেন না অবশ্যই নিবেন। কারন কাঠ কয়লা টবের PH লেবেল খুব সুন্দর হল্ড করে রাখবেেএবং কিছুটা পানি ধরে রাখে, রোগ জীবানু নাষক সে জন্য অবশ্যই আপনারা কাঠ কয়লা মেশাবেন। এগুলো মিশানোর সময় সবগুলো ভালো করে নাও মিশতে পারে বা মিশবেও না। আপনারা যখন পটিং করবেন তখন দেখ দেখে বুঝে সেইভাবে দিবেন। এসকল মিডিয়া গুলো টবের ভিতরে চারার সাথে এমন ভাবে চাপিয়ে ফিট করে দিবেন যাতে চারা গাছ সোজা থাকে, কোনো দিকে হেলে বা বাকা হয়ে না থাকে।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে এই গাছটাকে আমরা রাখবো কোথাই? আমরা এই টব কে এমন যাইগাতে রাখবো যেখানে ডিরেক্ট রোদ পরবে না,যেখানে যথেষ্ট বাতাস চলাচল করবে সেটা গাছের ছায়াতে বা এককথাই ছায়া এবং প্রাকৃতিক বাতাস যুক্ত জাইগাতে রাখবো। সব কিছু কম্পিলিট এবার আসুন এই গাছে পানি দিয়া খাবার দিয়া অনান্য পরিচর্যা কিভাবে করবেন জেনে নিন।
পরিচর্যা
এই যে পটিং মিডিয়ায় আমরা যে পটিং করলাম এই পটিং উপাদন গুলো অবশ্যই গরম পানিতে ফুটিয়ে নিবেন ভালো করে। বিশেষ করে গাছের ছাল ভালো করে ফুটিয়ে নিবেন আর কাঠ কয়লা টা না ফুটালেও হবে কারন আপনি কয়লা সরাসরি আগুন থেকে নিচ্ছেন। কাঠ কয়লা বাদে সব মিডিয়া গুলো ফুটন্ত পানিতে দিয়ে পরে রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করবেন। এরপরে খাবার, কি খাবার দিবো অর্কিড গাছে , সারা বছর Go Garden NPK 19 19 19 ব্যবহার করতে পারেন। এক লিটার পানিতে এক চামস গুলে এই গাছে দিবো একমাত্র খাবার কিন্তু এইটা।
আর এই গাছ লাগানোর পরে খাবার দিয়া শুরু করবেন কবে থেকে। এই গাছটা লাগানোর সময় অনেক অত্যাচারের ভিতর দিয়ে যাবে। সে জন্য কমপক্ষে ৫ বা ৬ দিন কোনো খাবার দিবেন না। গাছটা আগে আপনার বাড়ির আবহাওয়ার সাথে সতেজ হয়ে দারিয়ে যাক এরপর আপনি নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহে একবার NPK 19 19 19 গাছের গড়াতে ভালো করে স্প্রে করে দিবেন।
ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url