হযরত মুহাম্মাদ সাঃ এর জীবনী
বিশ্ব মানবের মুক্তির দিশারি হযরত মুহাম্মাদ সাঃ নতুন জাতী গঠনে যে ভূমিকা রেখেছিলেন বিশ্ব ইতিহসে চির উজ্জল ও অম্লান হয়ে থাকবে । তিনি ছিলেন মুসলিম উম্মাহর সঠিক দিশারি । অতি অল্প সময়ে কুসংস্কারাচ্ছন্ন গোত্রীয় কলহে শতধাভিক্ত একটি জাতিকে সুশৃঙ্খল সুসংবদ্ধ জাতিতে পরিনিত করে বিশ্ব ইতিহাসে অম্লান হয়ে আছেন ।
হযরত মুহাম্মাদ সাঃ এর জন্ম, শৈশব ও কৈাশর :
সূচিপত্রঃ হযরত মুহাম্মাদ সাঃ এর জীবনী।
আরব যখন চরম জাহিলিয়্যাতে নিমজ্জিত তখন আরবে কুরাইশ বংশে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মহানবী
হযরত মুহাম্মাদ (সা.) জন্ম হয় ।
তার পিতার নাম আব্দল্লা । দাদার নাম আব্দুল মুত্তালিব । মাতার নাম আমিনা । নানার
নাম ওয়াহাব । জন্মের পূবে তার পিতা ইন্তিকাল করেন । দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁর
নাম রাখেন মুহাম্মাদ । আর তাঁর মাতা নাম রাখেন আহমাদ।
আরোপড়ুনঃ ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি?
জন্মের পর মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ধাত্রী মা হালিমার ঘড়ে লালিত-পালিত হন ।
হালিমা বনু সাদ গোত্রের লোক ছিলেন । আর বনু সাদ গোত্র বিশুদ্ধ আরবিতে কথা বলতো ।
ফলে মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ও বিশুদ্ধ আরবিতে কথা বলতেন ।
শৈশব কাল থেকে মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) - এর মাঝে ন্যায় ও ইনসাফের নজির
দেখা যায় । তিনি ধাত্রী হালিমার একটি স্তন পান করতেন অন্যটি তার দুদভাই
আব্দুল্লহর জন্য রেখেদিতেন ।
হালিমা মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কে পাঁচ বছর লালন-পালন করে তার মা
আমিনার নিকট রেখে যান। তার বয়স যখন ছয় বছর তখন তার মাতা ইন্তিকাল করেন ।
প্রিয়নবি (স.) অসহায় হয়ে পরলে তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন দাদা আব্দুল
মুত্তালিব । আর আট বছর বয়সে তার দাদাও মারা যান । এরপর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন
চাচা আবু তালিব ।
কৈাশর :০১
চাচা আবু তালিব অত্যন্ত আদর স্নেহ দিয়ে প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.)- কে
লালন-পালন করতে থাকেন। আবু তালিবের আর্থীক অবস্থা ছিলো অসচ্ছল । হযরত মহাম্মাদ
(সা.) এ অবস্থা অবলোকন করে চাচার সহযোগিতায কাজ করা শুরু করেন ।
তিনি মেষ চরাতেন । মেষ পালোক রাখাল বালকদের জন্য তিনি ছিলেন উত্তম আদর্শ ।
তাদের সাথে তিনি বন্ধুত্ব পূর্ন আচরন করতেন। কখনোই তাদের সাথে কলহ বা
ঝগড়া-বিবাদ করতেন না ।
তিনি ১২ বছর বয়সে ব্যবসার উদ্দেশ্যে চাচার সঙ্গে সিরিয়া যান । যাত্রা পথে
‘বুহায়রা’ নামক এক পাদ্রির সাথে দেখা হলে বুহায়রা হযরত মহাম্মাদ (স.)- কে অসাধারন
বালক বলে উল্লেখ করেন, এবং ভবিষ্যদ্বানী করে বরেন যে, এই বালকই হবে শেষ যামানার
আখেরি নবী ( শেষ নবী ) ।
শৈশবকাল থেকেই মহানবী হযরত মুহাম্মাদ ( সা. ) ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী ।
সিরিয়া থেকে ফিরে তিনি ফিজার যুদ্ধের বিভীষিকা দেখলেন । যুদ্ধটি শুরু হলো নিষিদ্ধ
মাসে । তাছারা কায়স গোত্র অন্যায়ভাবে কুরাইশদের উপর এ যুদ্ধো চাপিয়ে
দিয়েছিল । এজন্য একে ‘হারবুল ফিজার’ বা অন্যায় যুদ্ধো বলা হয় । এ যুদ্ধে অনেক
মানুষ আহত ও নিহত হয় । তাতে তার কমল হিৃদয় কেপে ওঠে । আহতদের আর্তনাদ শুনে তিনি
অস্থির হয়ে পড়লেন ।
শান্তিকামী মনুষ হিসাবে এ অশান্তি তো আর সহ্য হলো না । তাই তিনি আরবের শান্তিকামী
যুবকদের নিয়ে ‘হিলফুল ফুযুল’ ( শান্তি সংঘ ) গঠন করলেন । এই সংঘের উদ্দেশ্য
ছিলো আর্তের সেবা, অত্যাচারিকে পতিরধ এবং অত্যাচারিতকে সাহায্য করা, শান্তি
-শৃঙ্খলা ্র প্রতিষ্ঠা করা এবং গোত্রে গোত্রে শান্তি সম্প্রীতি বজায়
রাখা।
বর্তমান আধুনিক বিশ্বের জাতি সংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শান্তিসংঘ হযরত
মহাম্মাদ ( স. ) - ঐ হিলফুল ফুযুলের কাছে অনেকংশে ঋণী । তারাও হিলফুল ফুযুলের মতো
যুদ্ধো বন্ধ করে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ঠ ।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ ( স. )- এর চারিত্রিক গুনাবলি, আমানতদারী, সত্যবাদীতা,
ন্যায়-নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার কারনে ততকালিন আরবের লোকজন তাকে আল-আমিন ( বিশ্বাসী
) উপাধি দিয়েছিল । নবিয়ত প্রাপ্তের পর যারা তাঁকে অস্বীকার করেছিল তারাও তাঁকে
মিথ্যাবাদী বলতে পারেনি ।
আরো পড়ুনঃ কালোজিরার উপকারিতা
ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url