শিশুর জ্বর না কমলে করণীয়
বাচ্চার জ্বর যখন আসে তখন মাঝে মাঝে জ্বর কোন ভাবে কমে না। প্যারাসিটামল শোলা দিয়ে
ও কাজ হয় না, তখন জ্বর ৩-৪ এ হয়ে যায়। এই জ্বর সারারাত থাকে এবং ভরে কমে যায়
এমত অবস্থায় কি করা উচিত?
শিশুর জ্বর না কমলে করণীয়ঃ
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড: ইমদাদুল হক ( দুলাল ) শিশুর জ্বর না
কমলে করণীয় এই পরামর্শ বলেছেন- জ্বর এটা স্বাভাবিক ইস্যু শিশুদের
উঠতে পারে বড়দের উঠতে পারে তবে জ্বর নামানোর জন্য কি করতে হবে বা
কি দেয়া লাগবে এবং কি করলে জ্বর নামবে সেটা নিয়ে আলোচনা শুরু করছি।
নাপা বলেন বা প্যারাসিটামল বলেন সেটা কয়েকটা ফর্মে পাওয়া
যায়। যেমন-
- ১. সাপোজিটরি
- ২. প্যারাসিটামল
- ৩. ট্যাবলেট
- ৪. ড্রপ পাওয়া যায়।
খুব ছোট বাবু হলে আমরা ড্রপ দিতে পারি। ধরেন একটা বাচ্চার জ্বর উঠছে
১০৩° তাকে নাপা ঔষধ দেওয়া হয় এক ঘন্টা পর দেখবেন ১০২ নামছে। আবার
এক দুই ঘন্টা পরে জ্বর ১০৩° হয়ে যায়। এরকম চলতে থাকলে
শিশুদের
মা-বাবা পাগল হয়ে যায় অত্যন্ত দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। আজকে এক ডাক্তার কালকে
আরেক ডাক্তার এভাবে চলতে থাকে। তবে দেখা যাচ্ছে দুইজন বাদ দিয়ে তিন নাম্বার
ডাক্তারের বেলায় তখন প্রায় পাঁচ দিন পার হয়ে যায় আপনা আপনি জ্বর ১০০
ডিগ্রির নিচে নেমে আসে। তখন সেই ৩ নাম্বার ডাক্তার যায় কেননা দিক তখন শিশুর মা
বাবারা মনে করে এই ওষুধটা ভালো ওষুধটা আগে পেলে আমার বাচ্চাটা আগে সুস্থ হয়ে
যেত। এটা একেবারেই ভুল ধারণা।
শিশুর জ্বরের মাত্রা সাধারণত যতই উঠুক না কেন দুই তিন দিনের মধ্যে টেম্পারেচার
আস্তে আস্তে কমতে থাকে।
এখন সবার প্রশ্ন হচ্ছে আমি নাপা সিরাপ দেবো? না ট্যাবলেট
দেবো? নাকি সাপোজিটরি দিব?
দেখেন সব থেকে সাপোজিটরি দেওয়া সেফ। সাপোজিটরি সেফ কারণ টেম্পারেচারটা
খুব তাড়াতাড়ি কমে। মুখে ওষুধ খাওয়ানোর অনেকক্ষণ পরে টেম্পারেচারটা
কমে। জ্বরের ওষুধ মুখে খাওয়ালে এক ঘন্টা আবার দেড় ঘন্টা সময় লাগে
টেম্পারেচার কমতে আর সাপোজিটরি দিলে আধা ঘন্টার মধ্যে জ্বরে টেম্পারেচার কমে
যায়।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের পাতলা পাইখানার সিরাপ
এখন অনেকে জানতে চাই সাপোজিটরি আমি কি ডজে দেব?
শিশুকে ওষুধটা আমরা খাওয়াবো ওজনে কেজির সাথে মিল রেখে। শিশুর প্রতি কেজি ওজনের
জন্য ১৫ মিলিগ্রাম করে দিয়ে দেব সেটা সিরাপ, ট্যাবলেট বা
সাপোজিটরি যেটাই হোক । একটা ট্যাবরেটে থাকে ৫০০ মিলিগ্রাম, এক চামচ সিরাপে
থাকে ১২৫ মিলিগ্রাম, একটা সাপোজিটরি ১২৫ মিলিগ্রাম, ২৫০ মিলিগ্রাম, এবং
৫০০ মিলিগ্রামের পাওয়া যায়।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড: ইমদাদুল হক ( দুলাল ) : আমি বলবো
সাপোজিটরি দিতে কারণ ইরিটেশন হয় অনেক সময় মুখে দিলে ইরিটেশন হয়ে বমি
হতে পারে। এই বমি কিসের জন্য সিরাপ, ট্যাবলেট, প্যারাসিটামল নাকি জ্বরের জন্য
হচ্ছে এটা আপনি আইডেন্টিফাই বা বুঝতে পারবেন না। সুতরাং আমি বলবো
সাপোজিটরি দিতে।
সর্তকতাঃ
জ্বর উঠলে আপনি একটু ধৈর্য ধরেন অপেক্ষা করেন সাথে সাথে কোন অ্যান্টিবায়োটিক
দেবেন না। আপনি যদি জলটাকে নামাতে চান তবে সাপোজিটরি ব্যবহার করবেন এবং সেটা
প্যারাসিটামল। আর সাথে বাচ্চাটাকে বারবার স্পন্স করবেন। স্পন্স করা মানে, কুসুম
গরম পানিতে একটি মোটা তোয়ালা ভিজিয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত বার বার
মোছাবেন। এবং এমন ভাবে বোঝাবেন যাতে পানির ফোটা বডিতে লেগে থাকে। এই
পানিটা বাতাসে উড়ে যাবে এবং বডির তাপমাত্রা শুষে নিয়ে উড়ে
যাবে। টেম্পারেচার আস্তে আস্তে কমাবে এবং আস্তে আস্তে কমানো ভালো এবং যদি
এটা না কমে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন । ভালো থাকবেন সুস্থ
থাকবেন ধন্যবাদ।
ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url