বাচ্চাদের ডায়রিয়া হলে করনীয়
পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়নি এমন শিশুর সংখ্যা খুজে পাওয়া কঠিন। এক সময় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শত শত শিশু মারা যেত। বাংলাদেশে একজন চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী ডক্টর রফিকুল ইসলাম খাবার শালান আবিষ্কারের পর থেকে দ্রুত মৃত্যুহার কমে এসেছে। তবে এখনো এটা বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিত্য মৃত্যুর সর্বোচ্চ কারণ। শিশুদের ডায়রিয়ার কারণে বাবা-মা এবং অবশ্যই শিশুদের শারীরিক মানসিক কষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। কাজেই এই গুরুত্ব কিন্তু এখনো কমেনি। তবে সাধারণত কিছু জিনিস জানলে এবং মানলে পাতলা পায়খানা হওয়া কমানো সম্ভব এবং হয়ে গেলেও শিশুটিকে দ্রুত সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের ডায়রিয়া হলে বাড়িতে যে ব্যবস্তা নিবেন
শিশুদের পাতলা পায়খানার কারণঃ
ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার অনেক রকম কারণ আছে। বিভিন্ন রকম জীবাণুর কারণে হতে
পারে, এলার্জির জন্য হতে পারে, এমনকি কিছু কিছু ধরনের রোগের কারণে হতে পারে। তবে
শিশুদের ডায়রিয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ভাইরাস। বিশেষ করে বয়স দুই বছরের আশেপাশে
হলে ৮৭% ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ শিশুর জ্বর না কমলে করনীয়
শিশুর ডায়রিয়া হয়েছে কিভাবে বুঝবেনঃ
সাধারণত দিনের তিনবার শিশু যদি তরল করে পায়খানা করে তাহলে বুঝতে হবে শিশুটির
ডায়রিয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পায়খানার সাথে মিউকাশ বা রক্ত যেতে পারে। অনেক
ক্ষেত্রে শরীর হালকা গরম থাকতে পারে তবে ভাইরাসের কারণে যদি ডায়রিয়ার মত
প্রবলেম হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে শিশুর জ্বর নাও থাকতে পারে। যদি আমাদের মনে হয়
শিশুর ডায়রিয়া হয়েছে তাহলে আমরা শিশুকে যে ধরনের খাবার খাওয়াবো আসুন জেনে
নি।
ডায়রিয়া হলে যে খাবার গুলো বেশি বেশি দিতে হবেঃ
খাবার স্যালাইন হচ্ছে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার মূল চিকিৎসা বাজারে এসএমসি
স্যালাইন কিনতে পাওয়া যায়। আপনারা চাইলে একজন রেজিস্টার ডাক্তারের পরামর্শ
নিয়ে স্যালাইন খাওয়াতে পারেন। এটাকে ৫০০ মিলি পানিতে মিশিয়ে খাওয়াতে
হবে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো শিশুর যেন পানি শূন্যতার মতো সমস্যা না হয়। যদি
বাচ্চাটির পানি শূন্যতা না হয় তাহলে ডায়রিয়া কাজটা ঠিক হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ শিশুদের বদ নজর থেকে বাচার দোয়া
দ্বিতীয় যে খাবারটি আমরা শিশুকে দেব সেটি হল জিংক ১৪ দিন পর্যন্ত জিংক খাওয়ালে
ডায়রিয়ার তীব্রতা কমে যায়। একই সঙ্গে পরবর্তীতে ডায়রিয়া যাতে না হয় সে
ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে। বাচ্চা যেহেতু ডায়রিয়ার জন্য পানি শূন্যতায় ভুগতে
পারে সেজন্য বাচ্চাকে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। সাধারণত রান্না
করার খাবারে তেল মসলা অন্যান্য রান্নার দ্রব্য যত কম দেওয়া যায় বা পরিণত
দেওয়া যায় তাতে ভালো হবে। এছাড়া কাচা কলার তরকারি, ভাত, সাগুদানা দিয়ে
রান্না করা শুফ, আপেল এগুলো কিন্তু ডায়রিয়ার প্রধান খাবার হতে পারে। তবে কিছু
কিছু খাবার কিন্তু আমাদের অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।
যে খাবারগুলো একদমি দেয়া যাবে নাঃ
ডায়রিয়া আক্রান্ত বাচ্চাটির বয়স যদি ছয় মাসের কম হয়ে থাকে অথবা এখনো বাড়তি
খাবার শুরু করেনি সে ক্ষেত্রে বাচ্চাকে অবশ্যই ঘন ঘন মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে
হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরনের মেডিসিন তাদেরকে দেয়া যাবে না।
আরো পড়ুনঃ কোরআন থেকে মেয়েদের নাম র দিয়ে। ৫০ টি নাম অর্থসহ
ডায়রিয়া কান্ত বাচ্চাদের অতিরিক্ত তেল, চর্বি, মসলাযুক্ত খাবার, শরবত, কোক বা
অন্যান্য চিনি যুক্ত খাবার ফাস্টফুড, ফলের রস ইত্যাদি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে
হবে। ডায়রিয়া বন্ধ করার কোন ধরনের ওষুধ শিশুদেরকে দেওয়া উচিত নয় একমাত্র
খাবার স্যালাইন ছাড়া।
সতর্কতাঃ
যদি এমন হয় খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরে শিশু বমি করে দিয়েছে তাহলে তাকে আবারও খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। আর যদি এমন হয় খুব বেশি বমি হচ্ছে তাহলে কিন্তু মাস্ট চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url