বারোমাসি ফলের তালিকা ও ১০ টি বারোমাসি ফল গাছের চাষ।
বাড়ির ছাদে ফুল বাগান নয়, ফল বাগান এটাই কিন্তু এখন গাডেনারদের মধ্যে নতুন ট্রেন্ড। আর এ জন্য আমাদের এমন জাত বাছায় করতে হবে,যে জাতের ফলের গাছ আকারে ছোট হবে এবং সারা বছর আমাদের ফল দিয়ে যেতে সক্ষম থাকবে।
বারো মাসের ফলের গাছ নির্বাচন ও উৎপাদন কৈাশল বেছে নিতে পারেন আপনার বাসায় অন্তত্য বারোটি ফলের গাছ। প্রথমে পরিকল্পনা করুন এবং বাড়িতে যেসব ফলের গাছ আছে, সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন। তারপর নিচে ১০ রকম বারোমাসি ফল গাছ যেগুলো টবেই চাষ করতে পারেন।
- থাই বারোমাসি আমরা
- বারোমাসি পেয়ারা
- থাই বারোমাসি মিষ্টি কামরাংয়া
- থাই বারোমাসি ছবেদা
- বারোমাসি কটবেল
- রুবিরংগান
- বারোমাসি আম
- বারোমাসি সুইট লেমন
- থাই বারোমাসি মিষ্টি তেতুল
- বারোমাসি পাতিলেবু
থাই বারোমাসি আমরা
দশটি বারোমাসি ফলের তালিকায় প্রথমেই আমি রাখবো থাই বারোমাসি আমরা গাছকে। কারণ এটি এমন একটি জাত একেবারে বিকানেরাও করতে পারবেন এবং এটা প্রকৃত অর্থেই বারোমাসি জাত। এই গাছে যখনই কোন নতুন ডাল বের হয় তখনই সেটা নতুন ফুল নিয়ে বের হয়। অর্থাৎ এই গাছটি যদি আপনি বাগানে লাগিয়ে ফেলেন তাহলে সারা বছরই মানে বারোমাসি আপনি ফল পাবেন এটা আমি সুনিশ্চিত করে বলতে পারি। এ ধরনের থাই আমরা গাছের চারা আপনারা ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
বারোমাসি পেয়ারা
দ্বিতীয় যে ফল গাছটি আমি আপনাদেরকে লাগাতে বলবো সেটা হচ্ছে বারোমাসি পেয়ারা। অনেক জাতের বারোমাসি পেয়ারা আছে কিন্তু সমস্ত বারোমাসি পেয়ারার মধ্যে আমি সবার থেকে আগে রাখবো থাই সেভেন জাতের পেয়ারা কে।
থাই সেভেন পেয়ার কোয়ালিটি এবং চেহারা দেখোন। আমার মনে হয়, এই পেয়ারার কোয়ালিটি কেমন হবে এবং নিশ্চয়তা কেমন হবে সেটা আপনাদেরকে আর আলাদা করে বলতে হবে না। পেয়ারার চেহারা দেখে কিন্তু পেয়ারার কোয়ালিটির সম্পর্কে আন্দাজ করা যায়। এই পেয়ারাগুলো আমি প্রায় মাস দেড়েক আগে গাছ থেকে কালেক্ট করেছিলাম। থাই সেভেন পেয়ারর গড় ওজন হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম বা ৫০০ গ্রামও হয়ে থাকে।
থাই সেভেন পেয়ারা খেতে খুবই মিষ্টি, এর শাঁস একই সাথে নরম এবং কচকচে হয়ে থাকে। আপনারা চাইলে পরবর্তী কোন এক পোস্টে ব্রিকস মান কত আমি মেপে আপনাদেরকে দেখাতে পারি। থাই সেভেন জাতের পেয়ারার ভেতরের রংটা খুবই ইন্টারেস্টিং। তারা যখন দাশা থাকে তখন হালকা গোলাপি রং থাকে আরো একটু পেকে গেলে এই হালকা গোলাপি রংটা ডিপ পিং কালার হয়ে থাকে। পেয়ারার ভেতরটা দেখতে খুবই সুন্দর এবং এর মধ্যে বীজের পরিমাণও খুবই কম থাকে। নার্সারিতে থাই সেভেন জাতের পেয়ারা চারা ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
থাই বারোমাসি মিষ্টি কামরাংয়া
থাই বারোমাসি মিষ্টি কামরাংয়ার গাছ। এই জাতের গাছে শীতকাল বাদে সারা বছরি ফুল এবং ফল আসতে থাকে। প্রথমে যে দুটি ফল গাছের কথা বললাম তার তুলনায় কামরাংয়া গাছ চাষ করা সামান্য কঠিন। এই গাছটিতে পাতা সাদা হয়ে যাওয়া, পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া, ফুল ঝরে যাওয়া, ফল ঝরে যাওয়া ইত্যাদি বেশকিছু সমস্যা দেখা দেয়। কামরাংয়া গাছের মাটি তৈরি এবং সার প্রয়গও অন্যান্য গাছের থেকে কিছুটা আলাদা। কামরাংয়া গাছ লাগানো থেকে শুরু করে ফল আপনি খাওয়া পযন্ত যে পরিচর্চা করতে হবে তার A to Z জানতে চাইলে কমেন্ট করে জানাবেন।
থাই বারোমাসি ছবেদা
পরবর্তি গাছ থাই বারোমাসি ছবেদা এই গাছটি ছাড়া ফল বাগান কিন্তু একেবারে অসম্পন্ন এবং সারা বছর ফল বাগান জমিয়ে রাখতে এই গাছটি অবদান অনেক বেশি। টবেই হক বা হাপ ড্রামে এই গাছটি খুব সাজছন্দে বেরে উঠে এবং ফল দিতে থাকে। আর একেবারে সারা বছর থাই বারোমাসি লম্বা জাতের ছবেদা আপনাকে ফল দিবে এমন কি শীত কালেও এর ফল ধরা বন্ধ হয় না। একে বারে বিগ্রেনার রা এই গাছটি চাষ করতে পারবে। যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে ছবেদা গাছের উপর পোস্ট dotbolgger দেয়া আছে।
বারোমাসি কটবেল
বন্ধুরা এবারে যে বারোমাসি ফল গাছটি সম্পর্কে আমরা জানবো সেটা হচ্ছে কটবেল। কটবেল আপনাদের অনেকেরি প্রিয় আমারও অনেক প্রিয় একটি ফল। তবে এটা কিন্তু কোনো সাধারন জাতের কটবেল নয় এটা হলো থাই বারোমাসি জাতের কটবেল। এই গাছটি আপনারা মাটিতে লাগাতে পারেন আবার টবেও ফলাতে পারেন। আর ফল গাছের মধ্যে এই গাছটির মত সুন্দর গাছ খুব কমি আছে। এর ছোট ছোট গোল পাতা এবং ঝপালো আকৃতির জন্য বাগানের সুন্দরয্য বৃদ্ধি করতে এর জুরি মেলা ভার। এধরনের কটবেলের চারা গাছ আপনারা ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। বারোমাসি কটবেল খাটো জাতের হওয়ার জন্য টবে বা হাপ ড্রামের মধ্যে খুব সহজে করা যায়। বিগিনাররাও এই কাজটি করতে পারবে শুধু মাত্র জল দিয়ার ব্যপারে সাবধানি হতে হবে। অতিরিক্ত জল দিলে গাছের গুরায় ছাল পচে গিয়ে গাছ মারা যাওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়।
রুবিরংগান
এবারে যে গাছটির কথা বলবো এই গাছটি একটু রেয়ার এবং এখনো সমস্ত বাগানিদের হাতে এই গাছটি পৌছায়নি। কারন এই গাছটি সেভাবে মার্কেটে আভলআ্যভল নয়,আর এর দাম ও বেশ হাই সে জন্য সবাই এখনো হয়তো এই গাছটি নিজেদের বাগানে লাগিয়ে ইঠতে পারেননি। এই জাতটির নাম হলো রুবিরংগান। এই গাছটি প্রকৃত অর্থে বারোমাসি জাত থাই বারোমাসি আমরার মত এই গাছেরও যখনি কচি ডাল বের হয় তার সাথে ফুল বের হতে থাকে। রুবিরংগান শীতকাল বাদে সারা বছরি আমাদের ফল দিতে সক্ষম। আর গাছটি দেখতেও অতন্ত চমৎকার। রুবিরংগান এর ফুল অনেকটা লিচু ফুলের মত দেখতে এবং এর ফল দেখতে লাল রংগের অতন্ত আকর্ষনিয় খেতেও স্বাদ অনেকটা লচিুর কাছাকাছি। যদি আসেপাশে নার্চারিতে এই গাছটি থাকেে এবং একটি গাছের জন্য ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করতে প্রস্তুত থাকেন তাহলে অবশই এই গাছটি আপনার বাগানের চমৎকার আডিশন হতে পারে।
বারোমাসি আম
বারোমাসি ফল গাছের তালিকায় আম গাছের কথা না বললেই নয়। নার্চারিতে বিভিন্ন রকমের বারোমাসি আমের জাত পাওয়া যায়। তবে আমি আপনাদের বলবো থাই কাটিনন জাতের আম গাছ করার জন্য কারন এটি টব এবং হাপ ড্রামের জন্য় একেবারে উপযুক্ত একটি জাত। এর ফল অতন্ত ভালো কুয়ারিটির মিষ্টি এবং সারা বছর ধরে।
বারোমাসি সুইট লেমন
অষ্টম যে বারোমাসি ফল গাছটির কথা বলবো সেটি হচ্ছে সুইট লেমন। এটি মূলত এক ধরনের অরনামেন্টাল সারা বছর বাগান আলোকৃত করে রাখতে এর জুরি মেলা ভার। সুইট লেমন বছরে দুই থেকে তিন বার ফলন দিয়ে থাকে। এই গাছটি আপনারা একেবারে খুব সহজে আপনারা চাষ করতে পারবেন। সুইট লেমন এর বিষেসত্ব হলো এই জাতের লেবু খুসাসহ খাওয়া চলে তবে খাওয়ার থেকে বাগানে সুন্দর্য বরধনে এই গাছটি বেশি গুরত্বপূর্ন।
থাই বারোমাসি মিষ্টি তেতুল
নভম যে বারোমাসি ফল গাছটির কথা আমরা জানবো সেটি হলো খুবি ইন্টারেস্টিং একটি ফলের গাছ। থাই বারোমাসি মিষ্টি তেতুল। এই গাছটি আমার কাছে প্রায় তিন বছর ধরে রয়েছে। বছরে এই গাছটিতে তিন থেকে চার বার ফুল এসে থাকে তাই প্রায় সারা বছরি এই গাছটিতে ফল থাকে। বারোমাসি মিষ্টি তেতুল টব ফেন্ডলি গাছ, টবে বা হাপ ড্রামে আপনারা সহজে এই গাছটির চাষ করতে পারবেন। একেবারে নতুন রাও এই গাছটি খুব সহজে চাষ করতে পারবেন। কারন গাছটির বিশেষ কোনো পরিচর্চার প্রয়োজন হয় না। থাই বারোমাসি মিষ্টি তেতুলের চারা আপনারা ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে খুব সহজে নার্চারিতে পেয়ে যাবেন।
বারোমাসি পাতিলেবু
দশ নম্বার যে বারোমাসি ফলটির কথা বলবো সেটি হলো পাতিলেবু আমাদের সকলের বাগানে পাতিলেবু কম বেশি থাকে। তবে বর্তমানে নার্চারিতে বিভিন্ন রকম বারোমাসি পাতিলেবু চলে এসেছে । এর মধ্যে আমার বাক্তিগত ভাবে সব থেকে পছন্দের ছিংনেস চাইনা থ্রি পাতিলেবু এই লেবুর ধরন যেমন ভালো সেরকম সারা বছর প্রচুর পরিমানে ফল এই গাছটি দিতে থাকে।
ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url