""

মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার সহজ প্রকৃতিক উপায়

মুখের ব্রনের কালো দাগ দূর করার উপায়

মুলতানি ও চন্দন মাটি প্রাচীন সময় থেকেই ত্বকের যত্নের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই উপাদান দুটি ত্বকের ফর্সা ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। তার সাথে ত্বকের অস্বাভাবিকতার চোখ ও ময়লা দূর করে। এমন একটি সুন্দর ও স্বাভাবিক উপায় যেটি আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ায় এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক থেকে মুক্ত রাখে।

মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার সহজ প্রকৃতিক উপায়

পোস্টসূচীপত্রঃএই ব্লগে আমরা আলোচনা করব কিভাবে চন্দন ও মুলতানি মাটির ব্যবহার করে আমাদের ত্বককে আরো ফর্সা ও স্নিগ্ধ করা যায়। এখানে আমরা কিছু সব কিছু সহজ ও কার্যকরী উপায় তুলে ধরব। যেগুলি নিয়মিত ব্যাপারে আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করবে এবং আপনাকে দেবে প্রাণবন্ত একটি চেহারা।

মুলতানি মাটি ও গোলাপ জলের ব্যবহার

মুলতানি মাটি এবং গোলাপজল, এর দুটি উপাদান প্রাকৃতিক ত্বক পরিচর্যায় জন্য অন্তত জনপ্রিয় এবং কার্যকর। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশের ত্বক পরিচর্যায় মুলতানি মাটি ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি মূলত পাথরের পেশা মাটি, যা ত্বকের জন্য একটি আদর্শ উপাদান হিসেবে পরিচিত। মুলতানি মাটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল চুষে নেই, ময়লা পরিষ্কার করে এবং ত্বকের গভীরেভাবে শুদ্ধ করে। এই উপাদানটি ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে এবং তাকে আদ্রতা বজায় রাখে। এটি মূত্রাশয়ের মাধ্যমে ত্বকে থাকা দূষিত পদার্থ গুলি বের করে দেয়, ফলে ত্বক থাকে সতেজ এবং উজ্জ্বল। মুলতানি মাটির সাধারণত মুখের মিশ্রণ তা বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে কোমল ও প্রাকৃতিক ভাবে উজ্জ্বল করে তোলে। এজন্য অনেকে মুলতানি মাটি ময়েশ্চারাইজিং, স্কিন ব্রাইটনিং, অ্যাকনে  কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যবহার করে থাকেন। ত্বকের টক্সিন দূর করে এটি ত্বকে সুস্থ্য রাখে এবং এর সেল পূনর্নির্মাণে সহায়ক। 

গোলাপ জল ও ত্বকের পরিচর্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, জানানা গুণের জন্য পরিচিত। এটি ত্বকের স্নিগ্ধতা এবং মিশ্রণ তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। গোলাপ জল প্রাকৃতিক টোনারের মত কাজ করে, যা ত্বককে তরতাজা করে তলে এবং PH ব্যালেন্স রক্ষা করে। এর মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ রয়েছে। যা তোকে প্রদাহ রেশ এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। গোলাপ জল ত্বকে যেকোনো ধরনের তেল বা ময়লা জমতে দেয় না এবং ত্বককে নরম ও মিশ্রণ রাখে। গোলাপজল তাকে একটি সুগন্ধি যোগ করে, যা ত্বককে সতেজ এবং মনোমুগ্ধকর করে তোলে। গোলাপজল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া ধীর করে এবং বয়সের ছাপ কমায়। তাই অনেকেই দিনের শুরুতে বা শেষে গোলাপজল ব্যবহার করে থাকেন, যাতে ত্বককে সতেজ এবং শীতল রাখা যায়।

যখন মুলতানি মাটি এবং গোলাপজল একসাথে ব্যবহার করা হয়, তখন এর কার্যকারিতা আরো বাড়ে। মুলতানি মাটি ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে, এবং গোলাপ জল ত্বকে শান্তি এনে দেয়। গোলাপজল মুলতানি মাটির শুষ্কতার ভারসাম্য রাখে এবং তাকে আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। একত্রে ব্যবহার করলে একটি ত্বকের সেল রিবিল্ডিংয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ত্বককে উজ্জ্বল ও তরুণ রাখে। এটি ত্বককে হাইড্রেটেড, ময়েশ্চরাইজড এবং নরম করে তোলে, ফলে ত্বক থাকে সুস্থ ও সুন্দর। মুলতানি মাটি মুখে প্রাকৃতিক পিলিংয়ের এর কাজ করে, যা ত্বকের মৃত কোষগুলো বের করে দেয় এবং নতুন ত্বক তৈরির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। গোলাপজল এতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে, তোকে শীতল ও শান্ত করে এবং ত্বকের উপর কোন রকম জ্বালা বা অস্বস্তি সৃষ্টি হতে দেয় না। একত্রে ব্যবহারের মাধ্যমে এই দুটি উপাদান ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে এবং সারাদিন ধরে ত্বককে সতেজ, পরিষ্কার এবং সুরক্ষিত রাখে।

এই দুটি উপাদান নিয়মিত ব্যবহার করলে, আপনার ত্বক আরো উজ্জ্বল, কোমল এবং সজীব হয়ে উঠবে। প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এগুলি ত্বকে কোন ক্ষতি না করে, বরং দীর্ঘমেয়াদি ভাবে ভালো ফলাফল প্রদান করে। মুলতানি মাটি ও গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে দুই তিন দিন, তবে যদি আপনার তো খুব শুষ্ক বা সেনসিটিভ হয়, তাহলে আপনাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। এতে কোন এলার্জি বা ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে, সঠিকভাবে এবং নিয়মিত ব্যবহারে এই দুটি উপাদান আপনার ত্বককে একেবারে নতুন ভাবে বদলে দিতে সক্ষম।

মুলতানি মাটির অপকারিতা

মুলতানি মাটি, যদিও ত্বকের জন্য বেশ উপকারী, তবে এর কিছু অপকারিতা ও রয়েছে, যা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মুলতানি মাটি খুব শুষ্ক এবং শক্ত প্রকৃতির হয়, অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ত্বকের শুষ্কতা বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে যারা স্বাভাবিক বা শুষ্ক ত্বক রাখেন, তাদের জন্য এটি কিছুটা সমস্যা তৈরি করতে পারে। মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে থাকে, ফলে শুষ্ক ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এমনকি যদি এটি বেশি সময় তাকে রেখে দেওয়া হয়, তবে তাকে প্রাকৃতিক আদ্রতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে ত্বক ফাটা বা অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। এজন্য মুলতানি মাটি ব্যবহারের পরে ত্বকে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, অন্যথায় ত্বক আরও শুষ্ক এবং কুঁচকে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

এছাড়া, মুলতানি মাটি যদি অসুস্থকর পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে এতে ব্যাকটেরিয়া বা দূষণ থাকতে পারে, যা ত্বকে প্রদাহ বা সংক্রমণের সৃষ্টি করতে পারে। রাসায়নিক উপাদান বা কোন বিষাক্ত উপাদান যদি মুলতানি মাটিতে মিশে থাকে, তবে এটি ত্বকের জন্য অন্তত ক্ষতিকর হতে পারে। তাই মুলতানি মাটি কিনতে গেলে খেয়াল রাখতে হবে যে, এটি খাঁটি এবং প্রাকৃতিক। অনেক সময় বাজারে বিক্রি হওয়া মুলতানি মাটির মধ্য অপ্রত্যাশিত রাসায়নিক উপাদান বা ভেজাল থাকতে পারে, যা ত্বকে এলার্জি বা ইনফেকশনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ফলে এটি ব্যবহার করার আগে মুলতানি মাটির গুণগত মান পরীক্ষা করা উচিত, যাতে কোন ধরনের ঝুঁকি এড়ানো যায়।

অপরদিকে, মুলতানি মাটি ব্যবহার করার পর, যদি তা সঠিকভাবে ধোঁয়া না হয়, তাহলে এটি ত্বকে জমে গিয়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বিশেষত যারা ত্বকের ওপর অতিরিক্ত মেকআপ বা প্রাকৃতিক তেল জমিয়ে রাখেন, তাদের জন্য মুলতানি মাটির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। মুলতানি মাটি ত্বকের পরশগুলো বন্ধ করে দেয়, যা ব্রণ বা ত্বকে অন্যান্য ছোট ছোট দাগ সৃষ্টি করতে পারে। ত্বক যদি খুব সেনসিটিভ হয়, তবে মুলতানি মাটি ব্যবহার করলেই হয়তো কোন সাড়া শব্দ পাবেন না, কিন্তু এটি আপনার ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে,বিশেষত ত্বকে আঘাত বা র‌্যাশেল প্রাদুর্ভাব হলে। তাই মুলতানি মাটি ব্যবহারের পরে সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করা জরুরি, যাতে এটি পোরসগুলোতে জমে না থাকে। 

তবে, মুলতানি মাটি অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ত্বকের স্বাভাবিক রক্ষাকারী স্তরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ওপরে থাকা প্রাকৃতিক তেল এবং সুরক্ষা স্তর সরিয়ে দিতে পারে, যার ফলে ত্বক সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে এবং আরো সহজেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। বিশেষত শীতকাল বা শুষ্ক আবহাওয়া মুলতানি মাটি ব্যবহার করলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যেতে পারে,যা ত্বকের ময়েশ্চার ও নমনীয়তা কমিয়ে দেয়। কিছু মানুষ মুলতানি মাটির অতিরিক্ত ব্যবহারের কারনে ত্বকে র‌্যাশ বা চুলকানি অনুভব করেত পারেন, যা ত্বককে আরো জটিল অবস্থায় ফেলে দেয়। তাই যদি ত্বক খুব শুষ্ক বা সেনসিটিভ হয়, তাহলে মুলতানি মাটির ব্যবহার করার আগে একজন ত্বক বিশেষঙ্গের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এই সমস্ত কারণের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহারে একসাথে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। মুলতানি মাটি ব্যবহার করার পর তাকে আদ্রতা বজায় রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক যাতে অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। ত্বকের প্রতি ব্যাক্তি বিশেষ আলাদা ধরনের প্রক্রিয়া হতে পারে, তাই একে একভাবে ব্যবহার করার পূর্বে ত্বকে একটি প্যাচ টেস্ট করা ভালো। এটি আপনার ত্বকে কোন এলার্জি বা অস্থিতি সৃষ্টি করে কিনা তা যাচাই করতে সহায়ক। মুলতানি মাটি ব্যবহারের সময় যদি কোন ধরনের অস্থিতি বা অ্যালার্জি অনুভব হয়, তাহলে তা ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মুলতানি মাটি ব্যবহারের নিয়ম

মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার সহজ প্রকৃতিক উপায়

মুলতানি মাটি ত্বক পরিচর্যায় অন্তত জনপ্রিয় এবং কার্যকর একটি উপাদান, তবে এর সঠিক ব্যবহার পদ্ধতি জানা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুলতানি মাটি ব্যবহার করার প্রথম ধাপ হলো এটি পরিষ্কারভাবে ত্বকে প্রয়োগের উপযোগী করে প্রস্তুত করা। সাধারণত, মুলতানি মাটি পাউডার আকারে পাওয়া যায়, তাই এটি একটি পেস্টে পরিণত করতে কিছু তরল পদার্থের প্রয়োজন হয়। এটি তৈরি করার জন্য আপনি গোলাপ জল, পানি বা আলোকিত মধু ব্যবহার করতে পারেন, তবে গোলাপ জল ব্যবহার করলে ত্বক আরো সতেজ এবং সুগন্ধি হয়। মুলতানি মাটি তৈরীর সময় তার পরিমাণ নির্ভর করবে আপনার ত্বকের আকার ও প্রয়োজনের ওপর, তবে এটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে মিশ্রণটি খুব শক্ত বা খুব তরল না হয়ে যায়। মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে, এটি ত্বকে লাগানোর পর ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন এবং এর পরে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

মুলতানি মাটি ব্যবহারের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনার ত্বকের ধরন এবং অবস্থার প্রতি মনোযোগ দেয়া। যারা শুষ্ক ত্বক নিয়ে সমস্যায় আছেন, তাদের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল চুষে নিয়ে শুষ্কতা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাদের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর তাকে ভালো কোন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অন্তত্য জরুরি। ত্বকে যেন কোনো শুষ্কতা বা অস্বস্তি সৃষ্টি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যারা সাধারন বা তেলতেলে ত্বক নিয়ে আছেন, তাদের জন্য মুলতানি মাটি অন্তত্য উপকারি হতে পারে, কারণ এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল চুষে নিয়ে ব্রণ বা পিম্পল প্রতিরোধে সহায়ক। তবে আপনি যদি খুব সেনসিটিভ ত্বক রাখেন, তাহলে মুলতানি মাটি ব্যবহারের আগে একটি প্যাচ টেস্ট করা উচিত, যেন ত্বকে কোনো অ্যালার্জি বা র‌্যাশ তৈরি না হয়।

মুলতানি মাটি ব্যবহারের জন্য একটি আরেকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো এটি একত্রে অন্যান্য উপাদানের সাথে ব্যবহার করা। অনেকেই মুলতানি মাটির সাথে মধু, টমেটো রস বা লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করেন। মধু তোকে আদ্রতা যোগ করে এবং এটি ত্বককে সজীব রাখে। টমেটো বা লেবুর রস ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, এবং দাগ দূর করতে সহায়ক। এই ধরনের ব্যক্তি ত্বককে আরো উপকারী করে তুলতে পারে। তবে, কিছু উপাদান যেমন লেবু বা টমেটোর রস তকে একটু তীব্রভাবে কাজ করতে পারে, বিশেষত যারা সেনসিটিভ টক রাখেন তাদের জন্য, তাই তাদের আগে ছোট জায়গায় পরীক্ষা করে দেখা উচিত। এই ধরনের মিশ্রণ ব্যবহারের পর, ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর তক ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি  ত্বকে আরো উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখবে।

মুলতানি মাটির ব্যবহারের সময় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর পরিমাণ। অনেকেই মুলতানি মাটি বেশি সময় ধরে মুখে রেখে দেন, কিন্তু এটি ত্বকের জন্য আদর্শ নয়। সাধারণত মুলতানি মাটি ১০-১৫ মিনিটের জন্য তোকে রেখে ধুয়ে ফেলা উচিত, কারণ বেশি সময় রাখা হলে এটি ত্বক শুষ্ক করে ফেলতে পারে। ত্বক যদি খুব বেশি সুস্থ হয়ে যায়, তবে ত্বক খসখসে হয়ে যেতে পারে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নিঃশেষিত হতে পারে। এই কারণে, সময়সীমা মেনে চলা অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আপনি যদি মুলতানি মাটি মুখে ব্যবহার করার পরে ত্বকে কোন ধরনের শুষ্কতা বা অস্বস্তি অনুভব করেন, তবে প্রাণী বা গোলাপ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং ময়েশ্চরাইজার লাগান। এটি তবকে আদ্র রাখতে সাহায্য করবে এবং অতিরিক্ত শুষ্কতা থেকে রক্ষা করবে।

মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ত্বককে পূর্ণ জীবিত রাখতে এবং সতেজ রাখতে, এটি যদি রাতে ব্যবহার করেন তবে পরবর্তী সময়ে ত্বকে রাতে কোন শক্ত ময়েশ্চরাইজার লাগানো ভালো। এটি এটি ত্বকে সারারাত ধরে আদ্র রাখবে এবং ত্বকের পূর্ণ নির্মাণ প্রক্রিয়া ত্বারান্বিত করবে। সকালে উঠে আপনি একটি ভালো ক্লেনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে পারেন। এই ধরনের নিয়মিত রুটিন ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং এর উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। যদি আপনি দিনের বেলায় মুলতানি মাটি ব্যবহার করেন, তবে সানস্ক্রীন ব্যবহার করা ত্বকের সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য।

মুলতানি মাটি ব্যবহার করার নিয়ম অনেকটাই আপনার ত্বকের ধরন এবং সমস্যা অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে, তবে সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে এটি ত্বককে উজ্জ্বল এবং সজীব রাখে।

মুলতানি মাটির দাম কত

মুলতানি মাটির দাম ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ড, মান এবং পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, বাজারে এক কেজি মুলতানি মাটির দাম ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে, এর দাম স্থানীয় বাজারের অপর ও নির্ভর করতে পারে, যেমন শহর এবং গ্রাম এলাকায় দাম কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। কিছু ব্র্যান্ড যেমন আয়ুর্বেদিক বা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে প্রস্তুত করা মুলতানি মাটি একটু দামি হতে পারে। এছাড়া, অনলাইন মার্কেটপ্লেসে যেমন amazon, flipkart, বা অন্যান্য ই-কমার্স সাইটে মুলতানি মাটির দাম প্যাকেজ ও গ্রাম অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে, এবং গুণগত মান অনুযায়ী দামও বাড়তে পারে।

এছাড়া, মুলতানি মাটি পছন্দের ব্র্যান্ড বা দোকান অনুযায়ী দাম কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত, অগ্রানিক বা শতভাগ প্রাকৃতিক মুলতানি মাটি কিছুটা দামি হতে পারে কারণ এই ধরনের পণ্যগুলোতে কোনো রকম রাসায়নিক উপাদান বা ভেজাল থাকে না। কিছু স্থানীয় ব্যান্ডের মুলতানি মাটি আরো কম দামি হতে পারে, তবে এর মানের উপর সতর্ক থাকা উচিত। যদি আপনি বাজারে কিনতে চান তাহলে প্যাকেজিং, ব্যান্ড এবং গুনগত মান যাচাই করে কিনলে ভালো হবে। তবে, মুলতানি মাটি খুব বেশি দামি নয়, সাধারনত এটি সাশ্রয়ী মূল্যের একটি ত্বক পরিচর্যা উপাদান, যা  অধিকাংশ মানুষের পক্ষে সহজলভ্য। 

অনলাইনে কিনলে মুলতানি মাটির দাম কিছুটা বাড়তে পারে, কারন শিপিং চার্জও যোগ হতে পারে, তবে অনলাইনে বিভিন্ন অফার, ডিসকাউন্ট বা বন্ডলের মাধ্যমে আপনি কম দামে মুলতানি মাটি কিনতে পারেন। বিশেষ করে আপনি যদি বড় প্যাকেজ কিনতে চান, তাহলে দাম কম হতে পারে এবং অনেক সময় একাধিক প্যাকেজের সাথে কম্বো অফারও থাকে। তাছাড়া কিছু অনলাইন সাইটে পণ্য কিনলেই বিভিন্ন ধরনের সিকাউন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধাও পাওয়া যেতে পারে। যেমন, বিশেষ উৎসব বা সেল অনুষ্ঠানে দাম আরো কম হতে পারে, যা গ্রহকদের জন্য খুবি সুবিধাজনকন। তবে অনলাইনে কিনতে গেলে প্রোডাক্টের রিভিউ দেখে নেওয়া উচিত। যাতে আপনি নির্ভরযোগ্য এবং ভালো মানের মুলতানি মাটি কিনতে পারেন। 

মুলতানি মাটির দাম সাধারনত সস্তা হলেও, ব্র‌্যান্ড এবং উপাদান প্রক্রিয়া অনুযায়ী তার মান ভিন্ন হতে পারে। কিছু ব্র্যান্ড এর দাম একটু বেশি হতে পারে কারন তারা পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে মুলতানি মটি উৎপাদন করে থাকে। অনেক সময় বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা মূলতানি মাটি কিছু রাসায়নিক উপাদানসহ পাওয়া যেতে পারে, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে ভালো মানের মুলতানি মাটি সাধারনত আরও প্রাকৃতীক এবং শুদ্ধ থাকে, যা ত্বকের জন্য নিরাপদ। দাম ও গুণগত মান বিবেচনা করে, সঠিক পণ্য নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি একটি ভালো কার্যকারি ফলাফল পান।

সবশেষে, মুলতানি মাটির দাম অনেকটাই নির্ভর করে কোথা থেকে কিনা হচ্ছে  এবং কোন প্যাকেজে পাওয়া যাচ্ছে তার ওপর। এক কথায় মুলতানি মাটি একেটি সাশ্রীয় এবং জনপ্রিয় উপাদান হলেও, এটি বাজারে দাম কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত ব্যবহার করতে চান, তবে বাজারের দাম তুলনা করে এবং প্রয়জনিয় পরিমান দেখে কিনলে আরো সাশ্রীয় হতে পারে। 

মুলতানি মাটি মুখে ব্যবহারের নিয়ম

মুলতানি মাটি মুখে ব্যবহারের নিয়ম শুরু হয় সঠিক প্রস্তুুতর মাধ্যমে। প্রথমত, মুলতানি মাটি কেনার পর, একটি পরিষ্কার এবং নিরাপদ প্যাকেজিং থেকে বের করে নিন। মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি করার জন্য একটি পরিষ্কার পাত্রে প্রয়জনিয় পরিমান মুলতানি মাটি নিন, তার পর এর সাথে গোলাপ জল,মধু বা পানি মিশিয়ে একটি মিশ্রণ পেস্ট তৈরি করুন। গোলাপ জল ব্যবহার করলে এটি ত্বককে শান্ত এবং শীতল রাখে, আর মধু ত্বককে হাইড্রেটেড এবং নরম রাখে। মুলতানি মাটি যদি খুব শক্ত হয়ে যায়, তাহলে একটু বেশি পানি বা গোলাপজল মিশিয়ে পেস্টটি সঠিক ঘনত্বে তৈরি করুন।  একবার পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে, এটি ত্বকে লাগানোর প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রয়োজনে আপনি মুখ পরিষ্কার করে ত্বক থেকে ময়লা এবং তেল দুর করে নিন, যাতে মুলতানি মাটি সঠিক ভাকে কাজ করতে পারে। 

মুলতানি মাটি মুখে ব্যবহারের সময় এটি এক ধরনের প্যাক হিসাবে কাজ করে, যা ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে এবং অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। এই প্যাকটি ত্বকে লাগানোর পর সাধারনত ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। তবে খুব বেশি সময় রাখলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তাই সময় সীমা মেনে চলা উচিত। মুলতানি মাটি শুকানোর পর এটি ত্বকে একধরনে টানটান অনুভূতি সৃষ্টি করবে, যা ত্বকের ভিতরে থাকা ময়লা এবং অতিরিক্ত তেল বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় শুরু সংকেত। তবে, খুব বেশি সময় মুখে রাখলে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট হতে পারে, তাই বেশি সময় না রেখে নির্দিষ্ট সময় পর এটি ধুয়ে ফেলতে হবে। মুলতানি মাটির প্যাকটি যখন শুকিয়ে যাবে, তখন ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন, এবং ধুয়ার পর ত্বককে নরম এবং স্নিগ্ধ অনুভব করবেন। 

মুলতানি মাটি ব্যবহার করার পর, ত্বককে আরো সতেজ এবং আর্দ্র রাখার জন্য একটি ভালো ময়েশ্চরাইজার লাগানো উচিত। বিশেষ করে শুষ্ক ত্বক হলে, মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ত্বকে ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার না করলে শুষ্কতা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সঠিক পরবর্তী পদক্ষপে  আপনার ত্বক সঠিকভাবে যন্ত পাবে। যারা নিয়মিত মুলতানি মাটি ব্যবহার করেন ,তাদের জন্য এটি খুবিই গুরুত্বপূর্ণ কারন মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ত্বকে যে আর্দ্রতা কমে যায়,তা আবার পুনরুদ্ধার করা প্রয়োজন। সুতরাং মুখ ধুয়ে ফেললে ত্বকে তেল বা ময়েশ্চারাইজার লাগানোর মাধ্যমে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে রাখা উচিত। এটি ত্বককে একটি সুন্দর এবং স্বাস্থবান দীপ্তি প্রদান করবে। 

একইভাবে মুলতানি মাটি ব্যবহার করার পর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভ্যাস গরে তোলা উচিত। মুলতানি মাটি মুখে ব্যবহারের পর ত্বককে পর্যাপ্ত পরিমানে জল সরবরাহ করতে হবে, যাতে ত্বক পূণরায় আদ্র থাকে। সঠিক পরিমান পানি পান করাও গুরত্বপূর্ণ, কারণ এটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। যদি আপনি মুলতানি মাটি ব্যবহার করার পর বাইরে যেতে চান, তবে সানস্ক্রীন ব্যবহার করা খুবি গুরুত্বপূর্ণ। এটি ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্নি থেকে রক্ষা করবে। মনে রাখতে হবে, মুলতানি মাটি ব্যবহারের পরে ত্বক একটু বেশি সংবেদনশীল হতে পারে, তাই সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। 

সামগ্রিকভাবে, মুলতানি মাটি ব্যবহারের পরিমান এবং সময় অনুসারে এর ফলাফল বদলাতে পারে। নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে এটি ত্বককে পরিষ্কার, উজ্জল এবং সজীব রাখে। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার ত্বকের শুষ্কতা বাড়াতে পারে, তাই ব্যবহারের সময় সীমা মেনে চলা উচিত। বিশেষত, যারা সেনসিটিভ ত্বক রাখেন, তাদের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করা একটি ভালো অভ্যাস হতে পারে। এক কথায় মুলতানি মাটি যদি সঠিকভাবে এবং নিয়মিত ব্যবহার করা হয়, তবে এটি ত্বককে স্বাস্থ্যবান এবং সুন্দর রাখার জন্য একটি অত্যন্ত্য কার্যকর ‍উপাদান হতে পারে। 

মুলতানি মাটি শরীরে ব্যবহারের নিয়ম 

মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার সহজ প্রকৃতিক উপায়

মুলতানি মাটি শরীরে ব্যবহারের নিয়মও মুখের মতোই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরন করা প্রয়োজন, যাতে ত্বকের উপকারিতা ঠিকভাবে পাওয়া যায়। প্রথমে, মুলতানি মাটি ব্যবহার করার জন্য এটি একটি পেস্ট আকারে তৈরি করা প্রয়োজন। এজন্য একটি পরিষ্কার পাত্রে মুলতানি মাটি নিয়ে, তা পানি গোলাপ জল বা মধু দিয়ে মিশিয়ে একটি সুমসৃণ পেস্ট তৈরি করতে হবে। মুলতানি মাটির সাথে গোলাপ জল মিশালে এটি ত্বকে ঠান্ডা  এবং শীতল অনুভূতি দেবে, যা শরীরে ব্যবহারের জন্য বেশ উপকারী। আপনি যদি মধু ব্যবহার করেন তবে এটি ত্বককে আরও আদ্র এবং নরম রাখে। শরীরের যেই অংশে মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে চান, সে অংশটি আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন, যাতে ত্বকের ময়লা ও অতিরিক্ত তেল দুর হয়ে যায় এবং মুলতানি মাটি ত্বকে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। 

মুলতানি মাটি শরীরে ব্যবহার করার সময় সাধারনত এটি এক ধরনের স্ক্রাবিং বা প্যাক হিসাবে কাজ করে, যা ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল,ময়লা এবং মৃত কোষ শুষে নিয়ে ত্বককে সজীব ও উজ্জ্বল করে।  এটি বিশেষভাবে শরীরের কালো দাগ, ব্রণ বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যাগুলোর জন্য খুবি উপকারি। পেস্টটি শরীরের আক্রান্ত  অংশে আলতোভাবে লাগান এবং একে হালকা হাতে ম্যাসেজ করুন, যাতে এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে। মুলতানি মাটির পেস্ট শরীরে কিছুটা সময়ের জন্য লাগিয়ে রাখতে হবে, সাধারনত ১৫-২০ ‍মিনিট পর্যন্ত।  এই সময়ের মধ্য মুলতানি মাটি ত্বকের পোরসগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করবে এবং ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে। তবে খুব বেশি সময় এটি শরীরে রেখে ‍দিলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে, তাই নির্দষ্ট সময় মেনে পেস্ট ধুয়ে ফেলতে হবে। 

মুলতানি মাটি শরীরে ব্যবহার করার পর, শরীরের ত্বক একটু শুষ্ক  অনুভূতি দিতে পারে, বিশেষত শীতকালে বা শুষ্ক ত্বক থাকলে। তাই মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ত্বককে পুনরায় আদ্র রাখতে একটি ভালো ময়েশ্চরাইজার লাগানো জরুরি। ময়েশ্চরাইজার ত্বককে আবার নরম এবং মসৃন করবে, এবং এর ফলে ত্বককে আরও স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর দেখাবে। যারা তেলতেলে ত্বক রাখেন, তাদের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে না, কারন মুলতানি মাটি তাদের ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বককে স্বাভাবিক ও ভারসাম্যপূর্ণ রাখে, তবে শুষ্ক ত্বক বা সেনসিটিভ ত্বক  থাকলে ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার খুনি প্রয়োজনীয়, যাতে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়ে যায়। 

মুলতানি মাটি শরীরে ব্যবহার করার সময়, বিশেষ করে সোনালি ত্বক বা ড্রাই স্কিনের জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বণ করা উচিত। অনেক সময় শরীরে অতিরিক্ত শুষ্ক অংশে মুলতানি মাটির ব্যবহার করলে ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, যা টানটান এবং কুঁচকানো ত্বকের সৃষ্টি করতে পারে। তাই মুলতানি মাটি ব্যবহারের আগে ত্বক যদি খুব শুষ্ক হয়, তাহলে আপনি মধু অলিভ অয়ের বা নারিকেল তেল মিশিয়ে মুলতানি মাটির পেস্ট  তৈরি করতে পারেন, যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে এবং মুলায়েম করে তুলবে। শরীরের যে অংশে বিষেশ যন্ত নিতে চান, সেখানে মুলতানি মাটি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি ত্বকের সেল রিনিউয়াল প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারবেন, ফলে ত্বক আরও উজ্জ্বল ও সতেজ হয়ে উঠবে। 

মুলতানি মাটি শরীরে ব্যবহারের পর, বিশেষ করে যদি হালকা স্ক্রাব হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি ত্বককে সজীব এবং মসৃণ করে তোলে। এর ব্যবহার শুধু মাত্র শুষ্ক ত্বক নয়, বরং তেলতেলে বা মিশ্র ত্বকের জন্যও উপকারি। ত্বকে মুলতানি মাটি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি শুষ্ক ত্বকের পাশাপাশি অতিরিক্ত তেল ও ময়লা দূর করতে পারেণ, যা ব্রণ এবং একনে দূর করতে সহায়তা করে। তবে, ত্বক যদি অত্যন্ত সেনসিটিভ হয়, তাহলে মুলতানি মাটি ব্যবহারের আগে ছোট জায়গায় প্যাচ টেস্ট করা উচিত, যাতে কোনো সংক্রমন ও অ্যালার্জি এড়িয়ে চলা যায়। প্রতিটি ব্যবহারের পর ত্বকের অবস্থান অনুযায়ী মুলতানি মাটির পরিমান এবং ব্যবহারের সময় সীমা মেনে চললে এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর ত্বক পরিচর্যায় উপাদান হতে পারে। 

সবশেষে, মুলতানি মাটি শরীরে ব্যবহারের নিয়ম সঠিকভাবে পালন করলে এটি ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন তেলতেলে ত্বক, ব্রণ, ব্ল্যাকহেড, দাগছোপ, এসব থেকে মুক্তি পেতে মুলতানি মাটির একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। তবে, এটি ব্যবহার করার সময় নিয়মিত যত্ন ও পরবর্তী সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ অপরিহার্য।

মুলতানি মাটির ব্যবহারে সাবধানতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

মুলতানি মাটি ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে একটি প্রাকৃতিক এবং জনপ্রিয় উপাদান হলেও, এর কিছু সাবধানতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যা জানা অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মুলতানি মাটি ব্যবহারের সময় যদি তা দীর্ঘ সময় ত্বকে রেখে দেওয়া হয়, তবে এটি ত্বকের প্রাকৃতিক আদ্রতা চুষে নিয়ে ত্বক শুষ্ক করে দিতে পারে। বিশেষত শুষ্ক ত্বক বা শীতকালীন সময়ে এটি বেশি সময় ব্যবহার করলে ত্বকে কুচকানো বা ফাটা অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। অতএব, মুলতানি মাটি ব্যবহার করার সময় এটি ১০-১৫ মিনিটের বেশি ত্বকে রাখবেন না এবং সময়সীমা মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয়, তবে এটি ব্যবহারের পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে, যাতে ত্বক আদ্র থাকে এবং তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য বজায় থাকে।

দ্বিতীয়ত, মুলতানি মাটি ত্বকের প্রয়োগ করার সময় কিছু লোকের ত্বকের এলার্জি বা চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষত, যারা সেনসিটিভ ত্বক বা সোরিয়াসিস,একজিমা,বা অন্যান্য ত্বকের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য মুলতানি মাটির সাবধানতা  অবলম্বন করা উচিত। এ ধরনের সমস্যা থাকলে মুলতানি মাটি ব্যবহার করার আগে একটি প্যাচ টেস্ট করা জরুরি। প্যাচ টেস্ট করার জন্য, মুলতানি মাটির এক ছোট্ট পুরমান ত্বকের এক ছোট অংশে লাগিয়ে ২৪ ঘন্ট অপেক্ষা করুন। যদি কোনো ধরনের র‌্যাশ, চুলকানি বা অস্বস্তি  অনুভব করেন, তাহলে তা ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়। মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর যদি ত্বকে কোনো ধরনের বিরক্তিকর অনুভূতি বা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তবে ব্যবহার বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তবে, মুলতানি মাটি অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হলে তা ত্বকের পরশগুলো বন্ধ করে দিতে পারে এবং ব্রণ বা অন্যান্য ত্বকের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যদি মুলতানি মাটি ত্বকের ওপর খুব বেশি সময় রেখে দেয়া হয়, তখন এটি ত্বকে জমে গিয়ে ত্বকে নানান সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত্ব ব্রণ বা একনে আক্রান্ত ত্বকের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। অতএব, মুলতানি মাটি ব্যবহার করার সময় এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং অতিরিক্ত ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। মুখ এবং শরীরের ত্বকে মুলতানি মাটি ব্যবহার করার সময় এটি যেন খুব পাতলা বা শক্ত হয়ে না যায়, সেদিকেও নজর দেওয়া উচিত। কখনোই অত্যাধিক মুলতানি মাটি ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।

মুলতানি মাটির ব্যবহারের পর ত্বক পরিষ্কার  করার ক্ষেত্রে ত্বকের ওপর অতি জোরে আচরণ না করা উচিত। যখন এটি শুকিয়ে যায়, তখন টক একটু টানটান অনুভূতি দিতে পারে, যা সাধারণত ভালো সংকেত, তবে ত্বক ধুতে গিয়ে ত্বককে অতিরিক্ত জোরে ঘষবেন না। তাকে যদি বেশি চাপ প্রয়োগ করা হয়, তবে তা ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ত্বকের টেক্সচারও নষ্ট করে দিতে পারে। ত্বক ধোয়ার পর ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করলে ত্বক স্বস্তি পায় এবং মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ত্বক আরো সুস্থ এবং সতেজ হয়ে ওঠে। একইভাবে, ত্বক যদি খুব সংবেদনশীল হয়, তবে মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ঠান্ডা অথবা সাদামাটা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন, যাতে টক আরামদায়ক থাকে এবং কোন ধরনের বিরক্তি সৃষ্টি না।

এছাড়া, বাজারে বিক্রি হওয়া মুলতানি মাটি অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সংরক্ষণ করা হয়, যার ফলে এতে ব্যাকটেরিয়া বা দূষণ থাকতে পারে। এটি তাকে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং তাকে বিভিন্ন সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই, মুলতানি মাটি কিনে ব্যবহারের আগে তার গুণগতমান পরীক্ষা করা অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, যদি এটি খাঁটি মুলতানি মাটি না হয়ে কোন রাসায়নিক মিশ্রণ থাকে, তবে তা তোকে আরো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বাজারের অপ্রত্যাশিত বা কম মানের মুলতানি মাটি ব্যবহারের কারণে ত্বকে এলার্জি, ব্রণ, র‌্যাশ, অন্যান্য ধরনের ইনফেকশনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এই কারনে, একটি নির্ভরযোগ্য এবং সেরা মানের মুলতানি মাটি কিনে তা ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত।

মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর দীর্ঘ সময় সূর্যের আলোতে থাকার কারণে ত্বকের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। মুলতানি মাটি ব্যবহারের পরের ত্বক কিছুটা সেনসিটিভ হয়ে যেতে পারে, এবং অতিরিক্ত সূর্যের UV রশ্নি ত্বকে ক্ষতি করতে পারে। তাই মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অন্তত গুরুত্বপূর্ণ, যা তোকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্নি থেকে রক্ষা করবে। সানস্ক্রিন ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা এবং স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। এছাড়া, মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর একদিন অন্তর ত্বককে বিশ্রাম দিতে হবে, যাতে ত্বক অতিরিক্ত শুকিয়ে না যায় এবং তার স্বাভাবিক আদ্রতা বজায় থাকে।

শেষ কথা

চন্দন এবং মুলতানি মাটির গুনাগুনের কথা জেনে নিলেন। ত্বকের যত্নে এই উপাদান দুইটি অবিশ্বাস্য। সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ফর্সা হতে চান? তাহলে এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হবে উজ্জ্বল, মসৃণ। সৌন্দর্য চর্চায় চন্দন ও মুলতানি মাটি আপনার সঙ্গী হোক। এগিয়ে যান স্বাস্থ্যকর ত্বকের পথে প্রথম পদক্ষেপণ নিন।
dotbolgger

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url